Your one-stop destination to discover everything Indian that is happening on the Internet

ঈদের ছুটি


ঘটনাটি ২০০৪ সালের। তখনকার ঈদের ছুটি কাটাতে আমি আমার ফ্যামিলি সহ নানুর বাড়িতে বেড়াতে যাই। ঈদের দিন মামার সাথে সিনেমা দেখে বাড়ি ফিরছিলাম। রাত আনুমানিক ১১:৩০। মামার নোকিয়া ক্লাসিক ১১০০ সেট এর টর্চ দিয়ে আমরা বাড়ি ফিরছিলাম।

তো হঠাৎ মামার মোবাইলের চার্জ শেষ হয়ে গেল। এখানে বলে রাখছি, যে আমারদের বাড়িতে যেতে হলে বিশাল একটা মাঠ পার হয়ে যেতে হয়। মাঠের পাশেই বিশাল খাল। তো রাস্তা দিয়ে যেতে হলে মাঠ ঘুরে যেতে হয়। মানে দ্বিগুণ খাটুনি। তাই মামাকে বল্লাম মাঠের মাঝখান দিয়েই যেতে।

আমরা ভয়ে ভয়ে মাঠটি পার হতে লাগলাম। মাঠের কোনায় ছিল একটি পরিত্যাক্ত কুঁড়েঘর। কথিত আছে ২০বছর আগে ওই ঘরে স্বামীস্ত্রী একসাথে খুন হয়েছিল। এবং মাঝে মাঝে ওই ঘর থেকে আলো দেখা যেত। যদিও ওই ঘরে কারেন্ট এর ব্যবস্থা ছিল না!


আমরা প্রায় মাঠের শেষের দিকে আসছিলাম। আর সেখানেই রয়েছে বড় বড় সুপারী গাছ। হঠাৎ আমি দেখলাম যে মাঝখানের গাছের আঁগায় একটি মেছের কাঠির জ্বালিয়ে কেউ যদি উপুর করে ধরে রাখে তাহলে যেমন শেপ ধারণ করে সেই রকম ভাবে আগুন জ্বলছে। তো আমি ভাবলাম কি না কি হয়েছে। মামাকে বললাম যে, মামা দেখ ত ওটা কি।

মামা বুঝেছিল যে আসলে ওটা কি। তবুও আমি ভয় পাব বলে আমাকে বললেন যে ওটা আসলে আগুনই। যাতে সুপারি চুরি না হয়ে যায় তাই ওইরকম করা হয়েছে।

ঠিক মিনিট কয়েক পর কোথা থেকে যেন একটি ঘোমটা পড়া মেয়ে এসে আমাদের সামনের গাছের নিচে বসে বসে কাঁদতে লাগল। আমাদের এই অবস্থা দেখে মেয়েটার প্রতি খুবই মায়া লাগল। তো মামা আর আমি মেয়েটার কাছে যেতে লাগলাম।

আমি তখন মামার কোলে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে মেয়েটার যতই কাছে যাচ্ছি মেয়েটি ততই দূরে যাচ্ছে। মানে আমাদের মাঝখানের দূরত্ব আর কমে না। যেতে যেতে আমরা প্রায় ওই কুড়েঁ ঘরের কাছে এসে পড়লাম। আর মেয়েটি ঘরের ভেতরে গিয়ে মিলিয়ে গেল আর বিদ্যুৎ এর বিজলীর মত আলো জ্বলতে লাগলো। আমাদের আর বুঝতে বাকী রইল না যে আমাদের সাথে কি ঘটতেছে।

আমাকে কোলে নিয়েই মামা এমন জোড়ে দৌড় দিলেন যে বলার মত না।

প্রায় ১৫-২০মিনিট দৌড়ানোর পর আমরা নানার বাড়িতে এসে পড়লাম। নানা আমাদের খোঁজে বেড়িয়েছিলেন। তো নানা দেখলেন যে মামার গাঁ গরম করে জ্বর আসছে। তারপর আর কি।

নানা-নানীকে সব কিছু আমিই খুলে বললাম। অতপর মামাকে লবণ মেশানো গরম পানি দিয়ে গোসল করিয়ে কবিরাজ দিয়ে চিকিৎসা করিয়ে ভাল করে তুলল।

গত সপ্তাহেও মামাকে দেখে এলাম। তিনি কেমন জানি চুপচাপ হয়ে আছেন এই কতগুলো বছর। আগে সবসময় হাসিখুশি থাকতেন।

আমার কাছে এই ঘটনাটির কোন ব্যাখ্যা নেই। ( আসলে সেই গাছের উপরে আগুন সেটি হল সুপাড়ি গাছে শীতকালে মিথেন গ্যাস এর সৃষ্টি হয়। এবং গ্যাসটি কাবর্ন ডাই এর সহায়তায় আগুন জ্বালাতে সাহায্য করে।
Share:

Pageviews

Blog Archive