মামার বাড়িতে যাবার রাতে আমি আর আমার
মামাতো ভাই সেলিম ছুটিতে একবার মামা বাড়ি যাবার জন্য রওনা দেই। আমার মামার
বাসা ফরিদপুর। বাস থেকে নেমে হেঁটে হেঁটে বাসায় যাচ্ছি। পথিমধ্যে বাজার
পড়ে। সেলিম বলল বাজার থেকে মুরগী কিনে নিয়ে যাই বাসায় গেলে মামি পোলাও
করবে। যেই ভাবা সেই কাজ। মুরগী, পোলাওয়ের চাল এবং আরও কিছু টুকিটাকি জিনিস
কিনে রওনা হলাম। রাত তখন প্রায় ৭টা। শীতের সময় তাই মানুষ কম। কিছুদূর
আগানোর পর সরদার বাড়ি, এরপর প্রায় আধা
মেইল কোনও বাড়ি নেই, তারপরে যেই গ্রাম সেখানে আমাদের বাসা। সরদার বাড়ি পার
হয়ে এগিয়ে গেলাম সামনে। হাঁটছি আর গল্প করছি। হটাত দেখলাম পাশের এক ক্ষেতের
মধ্য দিয়ে আগুনের মতো কিছু ছুটে গেল। ঠিক দেখার আগেই নেই। ১মিনিট পড়ে আবার
দেখলাম। এবার সেলিমও দেখল। ও আমাকে বলল ভয় পাস না। ভয় পেলে আরও খবর খারাপ।
আমি কিছু বুঝলাম না কিন্তু স্বাভাবিক থাকলাম। এবার দেখলাম আগুনের মতো
গোলাটা ক্ষেতের উপর দিয়ে এসে রাস্তার উপর পড়লো। সেলিম বলল চোখ বন্ধ কর চোখ
বন্ধ কর। আমি চোখ বন্ধ করলাম। সেলিম জোরে জোরে সূরা পড়া শুরু করলো। ওর
দেখাদেখি আমিও সূরা পড়া শুরু করলাম। এসময় খুব আওয়াজ হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল ঝড়
হবে। আমাদের চারপাশে আওয়াজ বাড়তেই লাগলো। কতক্ষণ ছিল জানি না তবে হটাত
শুনলাম আওয়াজ কমে গেল। আর সেলিম চিৎকার করে ওরে বাবারে বলে আমার হাত ধরে
টান দিয়ে দৌড় দিলো। আমিও পাগলের মতো তার পিছনে দৌড় দিলাম। বাকি রাস্তা
কিভাবে এসেছি মনে নেই। নিজেদের বাড়ির উঠানে পৌঁছানোর পর হুঁশ হল। সেলিমের
দিকে তাকিয়ে দেখলাম তার হাতে রক্ত এবং বাজারের বাগ ঠিকই আছে কিন্তু মুরগীটা
নেই। মামা-মামিকে সব কথা বলতে উনারা বললেন এটা জিন ছিল হয়তো। খুব ভয়
পেয়েছিলাম সেদিন। এরপর প্রায়ই রাতে খুব বাজে স্বপ্ন দেখতাম। এখনো দেখি মাঝে
মাঝে।