Your one-stop destination to discover everything Indian that is happening on the Internet

ভূতুড়ে গল্প

ঘটনাটি আমার কাকার মুখ থেকে শোনা। আমার কাকার গ্রামের বাজারে একটা মুদি দোকান আছে। সেখানে হাটের দিন অনেক রাত পর্যন্ত বেচাকেনা হয়। কাকা মাঝে মাঝে আসতে আসতে নাকি রাত ১-২ টাওবেজে যেত। কাকার দোকানে সেলিম নামের এক কর্মচারী কাজ করতো। সে কথা বলতে পারতো না। মানে, বোবা ছিল। কাকা তাকে খুবই আদর যত্ন করতো। সেলিমের তিনকুলে কেউ নেই। সে তার দুঃসম্পর্কের এক মামার বাড়িতে থাকতো। সেই লোক মারা যাওয়ার পর না খেয়ে ছিল। কাকার দয়া হয়। নিজের দোকানে তাকে কাজ দেন।
সেলিম আমার দাদু বাড়িতেই থাকতো। কাকার সাথেই রাতে বাজার থেকে ফিরত। কাকা প্রায়ই বলতেন, সেলিম ছেলেটাকে দেখে উনার মাঝে মাঝে সন্দেহ হয়। উনি নাকি অনেকদিনই শুনেছেন গভীর রাতে সেলিমের ঘর থেকে কথাবার্তার আওয়াজ পাওয়া যায়(এমনকি কাকি মা নিজেও শুনেছেন)। কিন্তু সেলিম নিজে বোবা। তার কথা বলার প্রশ্নই আসে না।
একরাতে কাকা অনেক দেরি করেবাসায় ফিরছিলেন। সেদিন হাটবার ছিল তাই বাজারে লোকজনও ছিল বেশি। তাই দোকান বন্ধ করতে করতে সময়ওলাগে বেশি। কাকা বাড়ির পথ ধরেন রাত ১টার কিছু পরে। সাথে সেলিম। আগামীকাল বাসায় মেহমান আসার কথা তাইকাকা হাত থেকে বড়সড় ৪টা মুরগি কিনে রেখেছিলেন। সেলিমের হাতে মুরগিগুল। কাকার হাতে পান-সুপারি।
চাঁদের আলোয় চারপাশ ভালোই ঝলমল করছিলো। কাকা আনমনেই সেলিমের সাথে কথা বলছিলেন। দোকানে আজ কেমন বেচাকেনা হল সে সব নিয়ে। সেলিম মাথা নিচু করে শুনছেআর পাশাপাশি হাঁটছে। বাজার থেকে প্রায় ২০০-৩০০ হাত আসার পর রাস্তাটা বামেমোড় নিয়েছে অনেকটুকু। কাকা কথা বলতে বলতে আনমনেইএগুচ্ছিলেন, হটাত দেখতে পেলেন সামনে গাছের আড়ালে কি যেনও নড়ে উঠলো।
এখানে বলে রাখা দরকার, আকাশে বিরাট চাঁদ ছিল, এবং এমনকি রাস্তার সাদাবালিগুলোতে চাঁদের আলো পরে চিকচিক করছিলো। পরিষ্কার দেখা যাচ্ছিল চারপাশ। কাকা পাত্তা না দিয়ে এগুতে লাগলেন। কিন্তু সেলিম থমকে দাঁড়ালো। চোখ মুখ কুঁচকে কি যেনও দেখার চেষ্টা করলো। নাক দিয়ে ছোক ছোক করে কিসের যেনও গন্ধ নেয়ারচেষ্টা করলো। কাকা সেলিমের মধ্যে এমন ভাব আগেদেখেননি কখনো। তিনি একটু বিরক্ত হলেন। তাড়া লাগালেন জলদি যাওয়ার জন্য। কাকা পা বাড়ালেও সেলিম দাঁড়িয়ে রইলো। কাকা আবার পিছনে ঘুরে তাড়া লাগালে সে দৌড়ে এসে কাকার হাত ধরে জোর করে টেনে পিছনের দিকে নিয়ে যেতে চায়। কাকা বিরক্ত হয়ে হাত ছাড়িয়ে নিতে চাইলেন। কিন্তু সেলিমের গায়ে যেনও অসুরের শক্তি। সে কাকাকে প্রায় টেনে নিয়ে চলতে লাগলো বাজারের দিকে। এইবার কাকা স্পষ্ট শুনলেন পেছন থেকে কে যেনও উনার এবং সেলিমের নাম ধরে জোরে চিৎকার করলো। আওয়াজটা তিনবার শোনা গেলো। অপার্থিব সেই আওয়াজ যেনও কাকার কানটা তালা লাগিয়ে দিলো। বিমুরের মতো চেয়ে রইলেন রাস্তার দিকে। কিভাবে যেনও উনার মনে এই শব্দগুলো আঘাত করলো। এ কোনও মানুষের আওয়াজ হতে পারে না। হতে পারে না কোনও পশুর আওয়াজ। তাহলে? তাহলে, যা তিনি জীবনে বিশ্বাস করেননি, তাই কি হতে যাচ্ছে?এ কি ভূত প্রেত কিছুর পাল্লায় পড়লেন তিনি।
এদিকে সেলিম প্রায় বগলদাবা করে উনাকে দৌড়ে নিয়ে যেতে লাগলো বাজারের দিকে। সেলিমের হাত থেকে মুরগিগুলো পড়ে গিয়েছিলো। কাকা শেষবার যখন একবার পিছনে ফিরলেন তখন দেখলেন সেই মুরগিগুলো যেনও অদৃশ্য কোনও হাতের ছোঁওয়ায় সেই মোড়ের দিকে যেতে লাগলো।
সেইরাত কাকারা বাজারেই কাটিয়ে দিলেন। সকালে ফেরার পথে আরো কিছু লোক নিয়ে উনারা দেখতে চললেন মোড়ের সেখানে আসলে কি হয়েছে। উনারা যেই মোড়টার কাছাকাছি পৌঁছলেন তখন দেখলেন সেখানে রাস্তার উপর একটা বর্গের মতো আকৃতিবানিয়ে ৪টা মুরগির মাথা সাজানো। আর কিছুটা দূরে সেই মাথা ছাড়া দেহগুলো পড়েআছে।
এই ঘটনা কাকার সাথে উপস্থিত বাকি সবাইও দেখে। বাসায় ফেরার পর কাকা এবং সেলিম দুজনই অসুস্থ হয়ে পড়ে। সেলিমের প্রায় ১৫ দিনজ্বর থাকে। সে এই জ্বরের সময় গোঙানোর মতো কিছু একটাবলত। সেই ব্যাপারে কেউ আজ পর্যন্ত জানতে পারে নি।
Share:

Related Posts:

Pageviews

1064628